Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর ব্যাখ্যা পার্ট-(৮)

Share On :

u

قول الشيخ محمد بن عبد الوهاب في كشف الشبهات

শাইখ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব তাঁর কাশফুশ শুবুহাত (সংশয় নিরসন) বইয়ে যা বলেছেন

শাইখ মুহাম্মাদ বিন ‘আব্দুল ওয়াহ্হাব “কাশফুশ শুবুহাত” বইয়ে বলেন, “তাদের (অর্থাৎ মুশরিকদের) আরেকটা সংশয় আছে তা হলো: নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম উসামাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুর) বিরোধিতা করেছেন যখন তিনি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার পরেও এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বলেছিলেন:

أقتلته بعدما قال لا إله إلا الله

“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার পরেও তুমি তাকে হত্যা করলে?’’[1]

এরকম আরো হাদীস তারা উল্লেখ করে যেখানে উল্লেখ আছে যে, যে এই বাক্য বলবে তার (জান-মাল জব্দ করা) থেকে বিরত থাকতে হবে। এসব হাদীস দিয়ে এসকল মূর্খরা এটা বুঝাতে চায় যে, যে এই বাক্য বলবে সে যা-ই করুক তাতে সে কাফের হবে না, তাকে হত্যা করাও যাবে না। এসকল মূর্খদেরকে বলতে হবে, এটা (সবার) জানা আছে যে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইহুদিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন ও তাদেরকে বন্দি করেছেন অথচ তারা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলতো। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীরা বানু হানীফাহ গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন অথচ তারা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ” এর সাক্ষ্য দিতো, সালাত আদায় করতো ও মুসলিম হওয়ার দাবি করতো। আর যাদেরকে ‘আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) আগুনে পুড়িয়েছেন তারাও লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলতো। আর এই সকল মূর্খরা স্বীকার করে যে, যে মৃত্যুর পরে পুনরুত্থানকে অস্বীকার করবে সে কাফের হয়ে যাবে ও তাকে হত্যা করা হবে যদিও সে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে। তারা আরো স্বীকার করে যে, কেউ ইসলামের স্তম্ভসমূহের কোনো কিছু অস্বীকার করলে সে কাফের হয়ে যাবে ও তাকে হত্যা করা হবে যদিও সে ঐ বাক্য বলে। তো এটা কীভাবে হতে পারে যে, সে ইসলামের শাখা-প্রশাখাগত কিছু অস্বীকার করলে এই বাক্য তার কোনো উপকারে আসবে না অথচ তাওহীদ যেটা কিনা রাসূলদের দীনের ভিত্তি ও প্রধান বিষয় সেটা অস্বীকার করলেও তা তার উপকারে আসবে?! (এরপরও তারা এসব বলছে কারণ) আল্লাহর এই শত্রুরা এসকল হাদীসের অর্থ বোঝে না।”

শাইখ মুহাম্মাদ বিন ‘আব্দুল ওয়াহ্হাব (রাহিমাহুল্লাহ) আরো বলেন, “উসামার হাদীসের জবাব হলো : তিনি এক লোককে হত্যা করেছেন যে মুসলিম হওয়ার দাবি করেছিল। তাঁর ধারণা ছিল যে, এই লোক শুধু জান-মালের ভয়ে মুসলিম হওয়ার দাবি করেছে। কেউ যখন বাহ্যিকভাবে ইসলাম পালন করে তখন তার (জান-মালের ক্ষতি করা) থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব যতক্ষণ না তার থেকে এমন কিছু প্রকাশ পায়, যা তার বাহ্যিক ইসলাম পালনের (স্পষ্ট) বিপরীত। আল্লাহ তা‘আলা এ ব্যাপারে এই আয়াতটা নাযিল করেছেন:

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا ضَرَبْتُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَتَبَيَّنُوا

“হে মুমিনগণ, তোমরা যখন আল্লাহর রাস্তায় (জিহাদে) বের হবে তখন যাচাই-বাছাই করে নিবে।’’[2]

অর্থাৎ পরীক্ষা করে নিবে। এই আয়াত থেকে প্রমাণ হয় যে, এমন ব্যক্তিকে (হত্যা করা) থেকে বিরত থাকা ও তার ব্যাপারে যাচাই-বাছাই করা ওয়াজিব। যাচাই-বাছাইয়ের পরে তার থেকে যদি ইসলাম বিরোধী কিছু প্রমাণিত হয় তাহলে তাকে হত্যা করা হবে; যেহেতু আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

فتبينوا

অর্থাৎ নিশ্চিত হয়ে নাও। যদি এই কালিমাহ বললেই হত্যা থেকে সে রেহাই পেত তবে নিশ্চিত হয়ে নেয়ার কোন অর্থই থাকতো না। আরো যে হাদীস আছে এবং এরকম যত হাদীস আছে সেগুলোর ব্যাখ্যা তেমনটাই হবে যা আমরা উল্লেখ করেছি। আর তা হলো : যে বাহ্যিকভাবে ইসলাম পালন করে ও তাওহীদ মেনে চলে তার (জান-মাল জব্দ করা) থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব। তবে যদি তার থেকে ইসলাম বিরোধী কিছু প্রকাশ পায় তখন ভিন্ন কথা।

আর এর পক্ষে দলীল হলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

أقتلته بعدما قال لا إله إلا الله

“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার পরেও তুমি তাকে হত্যা করলে ?’’[3]

এবং তিনি আরো বলেছেন:

أمرت أن أقاتل الناس حتى يقولوا لا إله إلا الله

“আমাকে ততক্ষণ লোকেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদেশ করা হয়েছে যতক্ষণ না তারা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে।’’[4]

আর তিনিই খারেজীদের ব্যাপারে বলেছেন:

أينما لقيتموهم فاقتلوهم ، لئن أدركتهم لأقتلنهم قتل عاد

“তোমরা যেখানেই তাদেরকে পাবে তাদেরকে হত্যা করবে। আমি যদি তাদেরকে পাই তাহলে তাদেরকে আদ জাতির মতো হত্যা করবো।’’[5]

যদিও তারা সেই সকল ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত ছিল যারা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ সবচেয়ে বেশি বলতো। এমনকি সাহাবীরা নিজেদেরকে তাদের সামনে ছোট মনে করতেন। অথচ তারা সাহাবীদের কাছ থেকেই ইসলাম শিখেছিল। কিন্তু তাদের থেকে যখন শরীয়ত বিরোধী কাজকর্ম প্রকাশ পেল তখন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (বলা), বেশি বেশি ইবাদাত করা ও মুসলিম দাবি করা তাদের কোনো উপকারে আসেনি। আর আমরা ইহুদিদের বিরুদ্ধে ও সাহাবীদের বানু হানীফাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ব্যাপারে যা উল্লেখ করেছি সেগুলোও এর পক্ষে প্রমাণ বহন করে।

হাফিয ইবনু রজব (রাহিমাহুল্লাহ) তার কালিমাতুল ইখলাস নামক পুস্তিকায় বলেছেন:

أمرت أن أقاتل الناس حتى يشهدوا أن لا إله إلا الله ، وأن محمدا رسول الله

“আমাকে ততক্ষণ লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদেশ করা হয়েছে যতক্ষণ না তারা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া ইবাদাতের উপযুক্ত সত্য কোনো ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল।’’[6]

রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই হাদীসের ব্যাপারে তিনি বলেন : ‘উমার (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) ও কিছু সাহাবী এই হাদীস থেকে এটা বুঝেছেন, যে ব্যক্তি এই দুইটি বিষয়ের সাক্ষ্য দিবে সে শুধু এটার জন্যই দুনিয়ার শাস্তি থেকে রক্ষা পেয়ে যাবে। তাই তারা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা থেকে বিরত ছিলেন যারা যাকাত প্রদানে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। আর আবূ বাকর আস-সিদ্দীক্ব (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) এই হাদীস থেকে বুঝেছেন যে, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা থেকে বিরত থাকা যাবে না যতক্ষণ না তারা এর হক আদায় করছে। কারণ নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

فإذا فعلوا ذلك منعوا مني دماءهم وأموالهم إلا بحقها وحسابهم على الله

“তারা যদি এগুলো করে তাহলে আমার থেকে তারা নিজেদের জান-মাল নিরাপদ রাখতে পারবে তবে (তাদের এই কথার) সত্যতার বিষয়টি ভিন্ন। আর তাদের হিসাব আল্লাহর নিকট।’’[7]

আর (তাই) আবূ বাকর (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) বলেছেন:

الزكاة حق المال

“যাকাত হলো মালের (উপর ইসলামের) অধিকার।’’[8]

এই হাদীস থেকে আবূ বাকর সিদ্দীক্ব (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) এটাই বুঝেছেন। হাদীসটা ইবনু ‘উমার ও আনাস (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা) বাদেও বেশ কয়েকজন সাহাবী নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেন:

أمرت أن أقاتل الناس حتى يشهدوا أن لا إله إلا الله وأن محمدا رسول الله ويقيموا الصلاة ويؤتوا الزكاة

“আমাকে আদেশ করা হয়েছে আমি যেন লোকদের বিরুদ্ধে ততক্ষণ যুদ্ধ করি যতক্ষণ না তারা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া ইবাদাতের উপযুক্ত সত্য কোনো ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল, আর তারা সালাত আদায় করে এবং যাকাত দেয়।’’[9]

কুরআনে বর্ণিত আল্লাহ তা‘আলার বাণীও এই বিষয়টিকে প্রমাণ করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

فَإِنْ تَابُوا وَأَقَامُوا الصَّلاَةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ فَخَلُّوا سَبِيلَهُمْ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيم

“…তারা যদি তাওবাহ করে, সালাত কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে তবে তাদের পথ ছেড়ে দাও ; নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’’[10]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:

فَإِنْ تَابُوا وَأَقَامُوا الصَّلاَةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ فَإِخْوَانُكُمْ فِي الدِّينِ وَنُفَصِّلُ الآيَاتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ

“তারা যদি তাওবাহ করে, সালাত কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে তাহলে তারা তোমাদের দীনী ভাই; আর আমরা জ্ঞানীদের জন্য আয়াতসমূহকে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করি।’’[11]

আল্লাহ তা‘আলার এই বাণী প্রমাণ করে যে, তাওহীদের (প্রতি বিশ্বাসের) সাথে ফরজ কাজগুলোও আদায় করা ছাড়া দীনের ভ্রাতৃত্ব সাব্যস্ত হয় না। কারণ নিশ্চয়ই তাওহীদ প্রতিষ্ঠা ছাড়া কেবল শিরক থেকে তাওবাহ (গ্রহণযোগ্য) হয় না। আবূ বাকর (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) সাহাবীদেরকে যখন তার এই সিদ্ধান্ত জানালেন তখন তারা (তাদের পূর্ববর্তী মত থেকে) তার মতে ফিরে আসলেন এবং তারা এটাকেই সঠিক হিসেবে বিশ্বাস করলেন । জানা গেলো, যে ঐ বাক্যের সাক্ষ্য দেয় তার থেকে দুনিয়াবী সকল শাস্তি একেবারে রহিত হয় না। বরং ইসলামের অধিকারের কোনোকিছু নষ্ট করলে তাকে শাস্তি দেয়া হয়। আর আখিরাতের শাস্তির ব্যাপারটাও এমন।

তিনি আরো বলেন, যে একদল আলেম বলেছেন, এই সকল হাদীসের উদ্দেশ্য হলো (এটা বুঝানো যে) লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর উচ্চারণ জান্নাতে প্রবেশ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির কারণ এবং এটার দাবিও তাই। কিন্তু এই দাবি কোনো কাজে আসবে না যতক্ষণ না এর শর্তাবলী পূরণ করা হবে ও সমস্ত প্রতিবন্ধকতা (যা এই কালিমাকে বিনষ্ট করে তা) দূর করা হবে। কোনো শর্ত ছুটে গেলে বা কোনো প্রতিবন্ধকতা থেকে গেলে সেটার কারণে এর দাবি পূরণ নাও হতে পারে । আর এটা হাসান বাসরী ও ওয়াহব ইবনু মুনাব্বিহের মত এবং এটাই অধিকতর স্পষ্ট। অতঃপর তিনি হাসান বাসরী থেকে বর্ণনা করেছেন যে, যখন ফারাজদাক তার সহধর্মিণীকে কবর দিচ্ছিলেন তখন তিনি ফারাজদাককে একথা বললেন: এই দিনের জন্য তুমি কী প্রস্তুত করেছো ? ফারাজদাক উত্তরে বললেন: সত্তর বছর ধরে আমি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ প্রস্তুত করেছি। হাসান বললেন : হ্যাঁ, এগুলোতো কিছু সংখ্যা মাত্র । কিন্তু লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর তো কিছু শর্ত আছে। অতএব, সতীসাধ্বী নারীদেরকে জেনার অপবাদ দেয়া থেকে সাবধান হোন। হাসানকে বলা হলো , কিছু মানুষ বলে, যে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। অতঃপর তিনি বলেন, যে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে এবং এর চাহিদাগুলো (অধিকার ও ফরজ) আদায় করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। ওয়াহাব ইবনু মুনাব্বিহকে একজন প্রশ্ন করলেন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ কি জান্নাতের চাবি নয় ? তিনি উত্তরে বললেন, অবশ্যই। কিন্তু সকল চাবিরই তো কিছু দাঁত থাকে। তাই তুমি যদি এমন চাবি নিয়ে আসো যার দাঁত আছে তাহলে তা খুলবে। আর এমনটা না হলে তা খুলবে না।

আমি মনে করি যে সংশয়গুলোতে কিছু মানুষ পতিত হয়েছে যেমন যাদের ধারণা, যে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে সে যাই করুক যেমন : বড় শিরক যা আজকাল মাজার ও সৎ লোকদের কবরের কাছে করা হয়, যা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর সম্পূর্ণ বিরোধী ও বিপরীত, তাতেও সে কাফের হবে না; এসকল ব্যাপারে আলেমদের যে সকল বক্তব্য আমি উল্লেখ করেছি সেগুলোই সংশয় খণ্ডনের জন্য যথেষ্ট।

এটা তাদের পদ্ধতি যারা সংক্ষিপ্ত ও অপরিপূর্ণ উক্তি থেকে শুধু সে সকল উক্তিগুলোকে গ্রহণ করে যেগুলোকে তারা তাদের পক্ষের দলিল বলে মনে করে। আর তারা সে সকল উক্তিকে বর্জন করে যে উক্তিগুলো ঐসকল অস্পষ্ট উক্তিগুলোকে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করে দেয়। তাদের অবস্থা ঐ সকল লোকদের মতো যারা কিতাবের কিছু অংশ বিশ্বাস করে ও কিছু অংশ অবিশ্বাস করে। আল্লাহ তা‘আলা এই ধরনের লোকদের ব্যাপারে বলেছেন:

هُوَ الَّذِي أَنْـزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ آيَاتٌ مُحْكَمَاتٌ هُنَّ أُمُّ الْكِتَابِ وَأُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ فَأَمَّا الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ زَيْغٌ فَيَتَّبِعُونَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَاءَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَاءَ تَأْوِيلِهِ وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيلَهُ إِلا اللَّهُ وَالرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ يَقُولُونَ آمَنَّا بِهِ كُلٌّ مِنْ عِنْدِ رَبِّنَا وَمَا يَذَّكَّرُ إِلا أُولُو الأَلْبَابِ (٧) رَبَّنَا لاَ تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ (٨) رَبَّنَا إِنَّكَ جَامِعُ النَّاسِ لِيَوْمٍ لاَ رَيْبَ فِيهِ إِنَّ اللَّهَ لاَ يُخْلِفُ الْمِيعَادَ (٩)

“তিনিই তোমার উপর কিতাব নাযিল করেছেন যার মধ্যে কিছু মুহ্কাম (স্পষ্ট) আয়াত আছে আর সেগুলোই কিতাবের মূল আর অন্য আয়াতগুলো মুতাশাবিহ (অস্পষ্ট)। আর যাদের অন্তরে বক্রতা আছে তারা ফিতনা ও অপব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে অস্পষ্ট আয়াতগুলোর অনুসরণ করে। কিন্তু আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না। আর যারা জ্ঞানে সুপ্রতিষ্ঠিত তারা বলে, আমরা এতে ঈমান আনলাম, সবগুলোই আমাদের রবের পক্ষ থেকে, জ্ঞানীরা ছাড়া কেউই উপদেশ গ্রহণ করে না। (৭) হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে হিদায়াত দেয়ার পরে আমাদের অন্তরসমূহকে বক্র করবেন না। আপনার পক্ষ থেকে আমাদেরকে করুণা দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি মহান দাতা। (৮) হে আমাদের রব, নিশ্চয়ই আপনি মানুষকে এমন এক দিনে সমবেত করবেন যার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ ওয়াদা ভঙ্গ করেন না। (৯)’’[12]

হে আল্লাহ, হককে হক হিসেবেই আমাদের কাছে উপস্থাপন করুন এবং আমাদেরকে তার অনুসরণের তাওফীক্ব দান করুন। আর বাতিলকে বাতিল হিসেবেই আমাদের কাছে উপস্থাপন করুন এবং আমাদেরকে তার থেকে দূরে থাকার তাওফীক্ব দান করুন।

গ্রন্থ : মা’না লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়া মুকতাদাহা ওয়া আসারুহা ফিল ফারদি ওয়াল মুজতামা’, পৃষ্ঠা: ৪৭-৫৫

লেখক: শাইখ সালিহ বিন ফাওযান বিন আব্দুল্লাহ আল-ফাওযান

প্রকাশনী : মদিনা ইউনিভার্সিটি, মদিনা। তৃতীয় সংস্করণ (১৪২২ হিজরী, ২০০২ খৃষ্টাব্দ)

Footnotes


 

  1. সহীহ ইবনু হিব্বান: ৪৭৫১
  2. সূরা নিসা: ৯৪
  3. সহীহ মুসলিম: ৯৬
  4. সহীহ নাসায়ী: ৩৯৯৪
  5. মুসনাদ আহমাদ: ২/১৭৭
  6. সহীহ ইবনু মাজাহ: ৫৯
  7. সহীহ নাসায়ী: ৩৯৮৮
  8. সহীহ বুখারী: ১৩৮৮
  9. সহীহ ইবনু মাজাহ: ৫৯
  10. সূরা তাওবাহ: ০৫
  11. সূরা তাওবাহ: ১১
  12. সূরা আল ‘ইমরান: ৭-৯

Recommended Readings

Support The Da'wah in Bangladesh

May Allāh Bless You

%d bloggers like this: