Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

যুল-হিজ্জার প্রথম দশ দিন সম্পর্কিত দশটি বিষয়

Share On :

u

যুল-হিজ্জার প্রথম দশ দিন সম্পর্কিত দশটি বিষয় :

১. প্রথম নয় দিন ও ঈদের দিনকে নিয়ে সর্বমোট দশ দিন। একে যুল-হিজ্জার প্রথম দশ দিন বলা হয়, তবে এর মধ্যে শুধু নয় দিন রোযা রাখা যাবে, কারণ দশম দিনটি হলো ঈদের দিন। আর ঈদের দিন রোযা রাখা হারাম; উলামাদের এই বিষয়ে ইজমা আছে।[1]

২. যুল-হিজ্জার প্রথম নয় দিন রোযা রাখা জায়েয। হুজ্জাজ ব্যতীত বাকি সবার ক্ষেত্রে এর শেষ দিনটি আরাফার দিন হিসেবে গণ্য হবে। ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কর্তৃক বর্ণিত একটি হাদীসে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন; “অন্যান্য দিনের চেয়ে এই দশ দিনের নেক আমল আল্লাহর কাছে সর্বাধিক পছন্দনীয়।”[2]

৩. এই দিনগুলোতে, আল্লাহকে অধিক স্মরণ করা মুস্তাহাব্ব – তা পুরো দশ দিনের জন্যই প্রযোজ্য।

৪. এই দিনগুলোতে তাকবীর (আল্লাহু আকবার) পাঠ করা মুস্তাহাব্ব – তা পুরো দশ দিনের জন্যই প্রযোজ্য।

৫. এই দিনগুলোতে, বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা ও দান-সাদাকাহ করা মুস্তাহাব্ব – তা পুরো দশ দিনের জন্যই প্রযোজ্য।

৬. নবম দিন হলো আরাফার দিন। একটি সহীহ বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: “(আরাফার দিনের রোযা) বিগত এক বছর ও পরবর্তী এক বছরের গুনাহের কাফফারা হয়ে যায়।”[3] সুতরাং, এটি একটি মহান দিন, হুজ্জাজ ব্যতীত বাকি সবার জন্য এই দিনটিতে রোযা রাখা মুস্তাহাব্ব। শুধুমাত্র প্রথম নয় দিন রোযা রাখা জায়েয কেননা দশম দিনটি হলো ঈদের দিন।

৭. মহান আল্লাহ বলেছেন : যাতে তাদের জন্য রাখা কল্যাণগুলোকে তারা প্রত্যক্ষ করতে পারে এবং তিনি তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু হতে যা রিযক হিসেবে দিয়েছেন, তাদের উপর নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারে।”[4] ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন: “নির্দিষ্ট দিনগুলো হচ্ছে আরাফার দিন (৯ম), নাহর-এর দিন (১০ম),ও তাশরীকের দিন (১১,১২ ও ১৩তম দিন)।[5]

৮. যিনি কুরবানী করতে ইচ্ছুক তার শরীরের লোম পরিষ্কার করা অথবা নখ কাটা বৈধ না।[6] তবে তার পরিবারের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য না, বরং শুধুমাত্র পরিবারের কর্তা যিনি কুরবানী করবেন তার জন্য এটি প্রযোজ্য।

৯. কুরবানীর পশু যবেহ সংক্রান্ত কিছু বিধান:

ক. যে ব্যক্তি তার নিজ সম্পদ থেকে নিজের ও তার পরিবারের পক্ষে কুরবানীর পশু (উট, গরু, ভেড়া…) যবেহ করবেন – তার জন্য নিজ শরীরের পশম কাটা বা ছাঁটা, চামড়া তুলে ফেলা বা নখ কাটা জায়েয নয়।

খ. যে ব্যক্তি তার নিজ সম্পদ থেকে অন্যের জন্য যবেহ করবেন – যেমন, কেউ যদি তার বাবা বা তার মায়ের জন্য যবেহ করতে চান – তিনিও তার চুল কাটবেন না, তার চামড়া তুলবেন না বা তার নখ কাটবেন না।

গ. যে ব্যক্তি অন্য কারও সম্পদ দিয়ে তাদের পক্ষ থেকে যবেহ করতে চান – অর্থাৎ যিনি অন্য কারও পক্ষ থেকে কুরবানীর পশু যবেহ করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত – ঐ ব্যক্তি তার চুল, নখ কাটতে পারবেন ও তার চামড়া তুলতে পারবেন। তার এই অনুমতি আছে।

১০. ঈদুল আযহার দিন হলো মোট চারটি; দশম (ঈদের নামাযের দিন) এবং তাশরীকের দিন (যুল হিজ্জার একাদশ, দ্বাদশ এবং ত্রয়োদশ দিন)। যারা হজ্জ করবেন না তাদের জন্য এ দিনগুলোতে রোজা রাখা জায়েজ নয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “তাশরীকের দিনগুলো হচ্ছে খাওয়া ও পানাহারের দিন”[7] এই দিনগুলোও আল্লাহর স্মরণের জন্য নির্ধারিত। মহান আল্লাহ বলেছেন, “আর নির্ধারিত দিনগুলোতে আল্লাহর স্মরণ করো।”[8] 

এবং সকল প্রশংসা সৃষ্টি জগতের প্রতিপালকের।

আল্লামাহ ইবনু বায ও আল্লামাহ ইবনু উসাইমীনের কাজ থেকে সংগৃহীত, আল্লাহ তাদের উভয়ের প্রতি এবং সুন্নাহর সমস্ত আলিমদের প্রতি রহম করুন।

আবূ আব্দির-রহমান উওয়াইস আত-তাউইল @uwaisT
(২৩/১০/১৪৪১হি- ১৪/০৭/২০২০)

  1. আন-নববী কর্তৃক আল-মাজমু: ৬/৪৪০ এবং ইবনু আব্দিল-বার কর্তৃক আল-ইস্তিযকার : ২/৩৮৩
  2. আত-তিরমিযী: নং ৭৫৭
  3. আবু কাতাদাহ থেকে বর্ণিত, সহীহ মুসলিম: নং ১১৬২ এবং আত-তিরমিযী: নং ৭৪৯
  4. ২২:২৮
  5. আল-বুখারী : ২/২০
  6. মুসলিম : নং ১৯৭৭
  7. আবূ নুবায়শাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, সহীহ মুসলিম : ১১৪১
  8. সূরা বাকারা: ২০৩

Recommended Readings

Support The Da'wah in Bangladesh

May Allāh Bless You

%d bloggers like this: