Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

ফিলিস্তীনের বর্তমান পরিস্থিতি (Current situation in Palestine)

Share On :

u

ফিলিস্তীনের বর্তমান পরিস্থিতি এবং হামাসের আক্রমণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার পর শাইখ আবূ খাদীজাহ ‘আব্দুল-ওয়াহিদের উপদেশ:

“আজ ফিলিস্তীনে যা ঘটছে, তা অবশ্যই এই উম্মাহর জন্য একটা পরীক্ষা। আপনি যখন জানেন আপনার প্রতিবেশী একটা মাস্তান, এবং আপনি জানেন আপনার প্রতিবেশী শক্তিতে সুসজ্জিত, এবং আপনি জানেন আপনার প্রতিবেশী – যদি আপনি তাকে উসকে দেন – আপনার জানালা ভেঙ্গে দিবে আর আপনার সন্তানদের হত্যা করবে; তাহলে নিশ্চয়ই সে (সাধারণ) কোনো প্রতিবেশী না যার দিকে আপনি পাথর ছুড়ে (নিশ্চিন্তে থাকতে) পারবেন কেননা তাকে প্রতিহত করার ক্ষমতা আপনার নেই, এই জুলুম প্রতিহত করার ক্ষমতা আপনার নেই।

আর এটাই ফিলিস্তীনের উপমা। কেননা তাদের ঐ ক্ষমতা নেই, না ধর্মীয় জ্ঞানের দিক থেকে, না সামরিক শক্তির দিক থেকে। সুতরাং এটা চিন্তা করাই নিছক নির্বুদ্ধিতা যে, আপনি এমন এক জাতিকে আক্রমণ করতে যাচ্ছেন যারা পরিপূর্ণরূপে সশস্ত্র, যারা চরমপন্থি ইহুদিবাদীত্বে বিশ্বাসী এবং যারা যুদ্ধ ও হত্যাকান্ডের অজুহাত খুঁজছে। এবং আপনি এটাও জানেন যে তাদের বিতাড়িত করার ক্ষমতা আপনার নেই। এবং আপনি এটাও জানেন যে, তারা যখন আপনার দিকে ধেয়ে আসবে, তারা শুধু আপনাকে হত্যা করতে আসবে না; বরং তারা আপনার সন্তান, আপনার মা-বোন, সমস্ত স্কুল ও আপনার বাড়িঘর ধ্বংস করতে আসবে। আপনি যদি তাদের ১০ জন লোককে হত্যা করেন এর পরিবর্তে তারা আপনার ১০০ জন লোককে হত্যা করবে। তাদের একেক জনকে হত্যা করার পরিবর্তে তারা আপনার ডজন-কে-ডজন লোক হত্যা করবে।

এমতাবস্থায় যুদ্ধে লিপ্ত হওয়াতে কোনো বুদ্ধিমত্তা নেই, এবং তা কোনো ভাবেই বুদ্ধিবৃত্তিক নয়। এর উপর, বেসামরিক লোকদের হত্যা করা জায়েজ না। সুতরাং, যদি বেসামরিক লোকদের উপর হামলা করা হয় তবে তা শরীয়তে জায়েয নেই, কারণ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নারী, শিশু ও নিরস্ত্রদের হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন।

তাই একজন ব্যক্তিকে বিচক্ষণ হতে হবে, এই ধরনের বিষয়গুলো শক্তিশালী মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে যারা এর নেপথ্যে কাজ করছে, এবং আগে থেকেই এর নেপথ্যে কাজ করে এসেছে। আর আলিমদের দায়িত্ব হলো জনসাধারণকে তা শিক্ষা দেওয়া যেটা তাদের পার্থিব জীবনে উপকারে আসবে, দীনের ক্ষেত্রে তাদের সহায়তা করবে এবং যা অবশ্যই আল্লাহর সাহায্য বয়ে আনবে : আর তা হলো তাওহীদ, সঠিক আক্বীদাহ-বিশ্বাস, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাহ এবং আল্লাহর سبحانه و تعالى ইবাদতের দিকে প্রত্যাবর্তন। এটাই প্রতিকার, এটাই সমাধান।

কোনো প্রতিবেশী রাষ্ট্রে এলোমেলোভাবে আক্রমণ করা এবং তাদের বেসামরিক লোকদের হত্যা করা, বা আপনার সামনে যারাই আসুক তাদেরকে নির্বিচারে হত্যা করা কোনও সমাধান বয়ে আনবে না, কেননা বেসামরিক লোকদের হত্যা করা এমনিতেই হারাম। এই ধরনের বিশৃঙ্খল আক্রমণে আমরা বিশ্বাসী না, কেননা যখন তারা (শত্রুপক্ষ) পাল্টা আক্রমণ করবে তখন তারা আরও বেশি জুলুম, অত্যাচার ও ব্যাপক ক্ষতির উদ্দেশ্য নিয়ে আক্রমণ করবে। সুতরাং তারা (হামাস) যা করেছে তা প্রজ্ঞার পরিচায়ক না।

আর এই কারণেই – এবং আল্লাহই ভালো জানেন – আমি বিশ্বাস করি যে এর পেছনে আরো গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। কারণ এরকম একটা কাজের প্রতিক্রিয়া কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা জানার পরও কোনো মুসলিম তা কিভাবে করতে পারে? আমি কেন আমার প্রতিবেশীকে আক্রমণ করব যখন আমি জানি সে আমার স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যা করবে? এটা আমি কেন করতে যাবো? তারা আমার স্ত্রী-সন্তানদের আক্রমণ করবে আর আমি আত্মগোপনে থাকব? এটার কোনো মানেই হয় না!

এর নেপথ্যে আরও মারাত্মক কিছু ঘটছে কিন্তু সেটা কি তা আল্লাহই ভালো জানেন। এখানে কিছু বিষয়াদি আছে যা আমাদের কাছে এখনও পুরোপুরিভাবে বোধগম্য না।

তবে এর সমাধান হলো – আপনি উম্মাহর বর্তমান অবস্থা, এর দুর্বলতার কারণ এবং এর (গৌরব) পুনরুদ্ধারের উপায় সম্পর্কে আমাদের লেখা, এবং আমাদের ‘উলামা কর্তৃক লেখা বইপুস্তক/প্রবন্ধ, যা আমরা অনুবাদ করেছি সেগুলো পড়ুন। ইনশা’আল্লাহ আমি আজ এটা টুইট করব, ইনশা’আল্লাহ, এবং এই পরিস্থিতিতে – দীন শিক্ষা করা এবং উম্মাহকে সাহায্য করা – এটাই আমাদের করণীয়।

আর হ্যাঁ, আমাদের ক্ষতিগ্রস্থ মুসলিম ভাইবোনসহ তাদের পরিবারগুলোকে অবশ্যই সাহায্য করতে হবে, যেমন চিকিৎসা, খাদ্য, আশ্রয়, অনুদানসহ সকল মানবিক অনুদান প্রেরণের (বৈধ) খাতে তাদেরকে সাহায্য করুন, আর এভাবেই সাহায্য করতে হবে – আর অবশ্যই তাদের জন্য দু‘আ করুন – এছাড়া আমাদের আর করণীয় নেই, বারাকাল্লাহু ফীকুম।

আপনি যদি উম্মাহর কল্যাণ চান, তাহলে এটাই একমাত্র উপায়। আপনাকে বিচক্ষণ হতে হবে, আপনার শত্রুর কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে তা আপনাকে জানতে হবে। বেসামরিক ও নিরস্ত্রদের লক্ষ্যবস্তু বানানো মুসলিমদের জন্য নিষিদ্ধ। শুধু নেতৃস্থানীয় শাসকবৃন্দ যুদ্ধের ঘোষণা দিতে পারেন – এভাবে বিশৃঙ্খল হত্যাযজ্ঞ চালানোর মাধ্যমে যুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয় না।

সুতরাং সুন্নাহ কী তা শিখুন এবং এর উপর আমল করুন। বিবেক-বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে হবে বারাকাল্লাহু ফীকুম, এই উম্মাহর (প্রবীণ ও নেতৃস্থানীয়) ‘উলামাদের কাছে বিষয়গুলো প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে বিবেক-বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে হবে। আমাদের সন্তান, ভাই ও বোনদের সাহায্য করার জন্য আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি, যারা এই নৈরাজ্যের জন্য দায়ী নন বরঞ্চ তারা পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন।

যতবারই এই জুলুম-অত্যাচার আঘাত হানে আর অত্যাচারীরা আক্রমণ করে, নিরীহ মানুষজন ক্ষতিগ্রস্থ হয় – তাদের মসজিদ ও বাসস্থানগুলো উড়িয়ে দেওয়া হয়, তাদের স্কুল আর হাসপাতালগুলো ধ্বংস করা হয় এবং তাদের সন্তানরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে নিধন হতে থাকে। তাহলে বাস্তবে আদৌ কি কিছু অর্জিত হলো? এথেকে আপনি কী অর্জন করলেন? আমরা আল্লাহর সাহায্য প্রার্থী।

আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি তিনি যেন তাদেরকে সাহায্য করেন, তাদের প্রতি দয়া করেন, তাদেরকে হিদায়েত দেন, আমাদেরকে ক্ষমা করেন ও তাদেরকেও ক্ষমা করেন। আল্লাহ তা’আলা বিশ্বের সর্বত্র মুসলিমদের সাহায্য করুন।”

আমীন

প্রশ্নকর্তা: সুলায়মান আবূ হামজাহ
১০ অক্টোবর, সন ২০২৩

Abu Khadeejah: An advice during the class, and he accepted the advice to be shared so I wrote it down. Questioner: Sulaymaan Abu Hamzah.

10th of October 2023.

Recommended Readings

Support The Da'wah in Bangladesh

May Allāh Bless You

%d bloggers like this: